অনিন্দ্য রায়

অনিন্দ্য রায়


কেউ কেউ সরলবর্গীয় 


কাহিনীতে চলে যাব, ভাবি, ভাঙা নীলকুঠির পেছনে খড়ের ছাউনি ক'রে রয়ে যাব

রোদে মেলে দেব শ্বাস, বৃষ্টিতে কেচে নেব নিজেরই চামড়া
যদি সেই শৃগালের দেখা পাই,দুটি চক্ষু লোভ আর ভয়ের মুকুর

সাথে নেব ওকে, খাওয়াব-দাওয়াব
সারাদিন ঘুমিয়ে রইর দুইজনে

এবং রাত্রি এলে গাঁইতিকোদাল হাতে কুঠির ভেতরে যাব
ইঁদারায় উঁকি মেরে দেখব ক’টি নক্ষত্র আজ ওখানে পড়েছে

ইঁটের আড়াল আর দেশজ মাটির ঢিপি খুঁড়ে
যদি তোমার কঙ্কাল খুঁজে পাই, যদি পাই কাহিনী, তোমাকে






বাতারির বন ছিল দস্যু-হওয়ার এক শিক্ষায়তন
গেছি খালি হাতে

আর ফিরেছি রক্তের মতো লেবুর উদ্ভিন্ন কোয়া সারাগায়ে মেখে

নিষেধ করে নি কেউ
গাছেরা এমনি সাবলীল

শিক্ষায়তনে ছিল দস্যু-হওয়ার এক বাতারির বন






আয়না, তোমার আলো, তোমার আয়নার আলো, মনে হয় এক

আমি তবে নিজেই দ্বিতীয়
রশ্মিপুটুলির থেকে চরকায় একটিমাত্র সুতোকে কেটেছি

তা দিয়ে বেঁধেছি বিম্ব, গিঁটে পিছলিয়ে গেছে দৃশ্যচরাচর

খোলামুখ খুঁজতে খুঁজতে , ছাড়িয়ে রাখতে রাখতে
মনে হয়, দর্জি হওয়ার জন্য শরীর হয়েছে বোকা সেলাইমেশিন






আঙুলের ধাতুফুল, ফুল কেন ? আর কিছু ফোটে না কখনো?
আণবিক চুম্বনের অথবা প্রবল পেন্সিলে

চিহ্ন যা সমর্থন করে
ভাবি, সব গাছের ব্যাপার

পাতায় পাতায় আছে মসনদ

মুহুর্মুহু উত্থানপতন থেকে ফিরে আসছে স্পর্শের চরিত
ধরেছি কুসুমবাদ্য, কাঁপা হাতে, সামাজিকতায়



সূর্যাস্ত পেরিয়ে ওঠে প্রতিবর্ত পুরস্কারগুলি
কাস্তের মতো ধার, চাষী্কন্যার মতো বাঁধা তার ধানগাছে মোহ

শুধু ভয়ের পয়সা সে হারিয়ে  ফেলেছে

শুধু তার পোষা মনোবাঞ্ছাটিকে দড়িতে টানছে কেউ
আকাশ পেরিয়ে



"সকলই বাদ্যযন্ত্র, সকলেই স্পর্শ পেলে যথাযথ বাজে"

আমরা কয়েকজন স্রোতার আসন থেকে হইহল্লা করি






শিকার, কেউ খদ্যশৃঙ্খলের মাঝ থেকে খুলে নিয়েছেন নিজেকে
কেউ আহারের ভেতর পুষেছেন উপবাস আর ঘণ্টা বাজলেই
জিভ বাড়তে বাড়তে সারা পৃথিবীকেই পেঁচিয়ে ধরছে

তোমার হবির কথা জেনে গেছি সবাই
জমিয়ে রাখছ ক্ষুধামন্দের সিরাপ

যদি একছিপি পাই প্রাচীন বন্দুকটিকে আরেকবার উনোনে




“জানালা হত্যার গল্পে খোলে”
 বইটি দেখলাম

উপন্যাস বাড়িই নয় তাহলে, আগাপাশতলা জঙ্গল
কখনো বেড়াতে গিয়ে পা হড়কে পড়ি
ঝরাপাতা সরিয়ে সরিয়ে কঙ্কাল দেখে আরো চমৎকৃত






চিঠি যত চিকিৎসক,কাছে গিয়ে খুলে ফেলি, যা ভেবেছ খাম
যার মুখ থুতু দিয়ে আটকিয়ে ছিল কেউ
সহসা ছিঁড়তে গিয়ে অনবধানে রক্তাক্ত হয়েছে




১০

ফণা, নীচ থেকে সঙ্গীত উঠেছে, লক্ষ মুখ, অযুত পা, অভীপ্সা মাত্র এক
আমাকে ফুটো ক’রে দিয়েছে আর উড়িয়ে দিয়েছে তারার ডহরে

দেখছি, আলোদের ক্যাম্পাস,আঁধারের গাছতলা, এত ভিড়, এতজন গল্প করছে
কাউকেই চিনতে পারছি না
খুব কম বাজনাই চিনেছি আমরা

খুব কম সাপেরই বিষ রয়েছে তবুও
        আমাদের লাঠিগুলি বরাবরই ভালবাসে অনুগত হতে

3 thoughts on “অনিন্দ্য রায়

আপনার মন্তব্য এখানে রাখুন