ইন্দ্রনীল তেওয়ারী
ত্রিবেনী -১৪
বহুকাল কোনো চিঠি লেখা হয়নিতো
অক্ষর ঘুমিয়ে গেছে বরফের মত
চোখ জুড়ে দুটি সাদা পাতা জেগে আছে প্রিয়।
গীত
কতদিন কথা বলিনি।
কতদিন শুনিনি গান।
আজ এতো রোদ,এতো ঝলমলে সকাল………
গোলমেলে রাস্তা,
পৌছনো দায় হয়ে গেছে।
কতদিন ওড়েনি বাতাসে ঝরঝর বৃষ্টি।
কতদিন ঢেকে যায়নি আকাশ মেঘে।
আজ এতো যে মানুষ, কতকথা…
অসংখ্য ছায়াছবি।
মুখটুকু চিনে নেওয়া ভার।
আরও কতো ঘুম পেরিয়ে যাবে।
আরও কতো বিছানা, ঠিকানা………
অগুনতি চুম।
মনে হয়,
দুয়ার পেরোন যাবে না আর, দুয়ার না পেরোলে।
ফিউনেরাল
যেসব মানুশেরা একদিন হুস করে উড়ে গেছে প্রত্যাখানের পথে
আজ তাদের জন্য একটি শিউলি ফোঁটা ভোর উপচে পড়েছে।
অথচ আজ উৎসবের কোন কথা ছিল না।
কোন গান ওঠেনি গলায় ।
কোথাও কোন আলো, কোন সদ্য ঘুম থেকে জেগে ওঠা আলো
চুম বুলিয়ে দেয় নি অন্ধকারের চোখে।
কিন্তু কি আশ্চর্য দেখো,
কয়েকটি পরিত্যক্ত মানুশের জন্য
সমস্ত পথ, পথের ধুলো, টুকরো পাথর, শুকনো পাতা,
পাতায় ভিজতে থাকা জলজ রোদ
আকাশের এপার থেকে, ওপার থেকে
কেমন ঝড়িয়ে এনেছে শিউলি রাঙানো দিন।
সাংসারিক
আগুন ও অন্ধকারের বিরুদ্ধেও শত প্রাণ জেগে থাকে.
অথচ কুয়াশায় কুয়াশায় ঢেকে যায় জীবনের গান ,
জ্বলে যায় ক্রমশ আঁতুর ঘর। চরিত্রের শক্ত ভিতে
ছড়িয়ে পড়ে অন্তহীন মরুঝড়।
কুহকের কথা ঢুকে পড়ে জড়ানো বিছানায়।
কিছু গন্ধ, কিছু স্বাদের, ছবি চোখে ভাসে।
নিস্থব্ধ আলোড়নের ভেতরে চুমু খায়
দাউদাউ আগুন কাঠ।
মৃত্যু ও হাহাকারের মধ্যবর্তী শুন্যতায় আমরণ বেঁচে থাকে সংসার .
অপাংক্তেয় পঙক্তিমালা
বিগত এতো সময় ধরে প্রেমের কথা বলা হয়ে গেছে
তবুও কোথাও কোন শব্দ নেই।
কোথাও জল নেই এতটুকু যে তৃষ্ণার রং পালটে যাবে।
এতো অসংখ্য রাত ,রাতচরা পাখি, পাখি দের গান,
ফুল ফোঁটা ভোর।, গাছ তলার ছায়া ছায়া দিন, মায়াবী বিকেল, জরি ছোঁয়া সন্ধ্যা
সমস্ত পেরিয়ে যাওয়ার পরেও মুহূর্ত ফুরোয় না।
বস্তুত কোথাও ধুলো নেই এতটুকু যে নিশ্চিহ্ন হওয়ার ইতিহাস মুছে যাবে।
ত্রিবেণী
অন্ধ সকাল চোখে গেঁথে থাকে এখন।
এখানে মৃত্যুর বড় কাছাকাছি জীবন।।
পারলে সন্ধ্যের গা ছেনে আগুনের আলো জ্বেলে রেখো প্রিয়
শিরোনামহীন
যেই ক্ষণে কমে যাবে রোদ,
আমি বিকেলের দিকে তাকিয়ে বলে যাবো
ভালো থেকো।
ভাল থেকো গাছ।
রাস্তা।
হয়তো তখন তুমি চোখে লাগাও অন্য ভোর খোঁজা রাত।
শিরোনামহীন
ভাবনার ভিতর হেঁটে যেতে গিয়ে বুঝেছি
অনেক দূর চলে গেলে,
ফেরত যাওয়ার সমস্ত রাস্তাই দিক বদল করে।
ঠিকানার চিঠিরা পুড়ে যেতে থাকে অহর্নিশ।
মুখ চুম্বনের সময় ভুলে যায়
ঠোঁটেরও প্রান্ত বদল হয়,
সুখ আর তৃপ্তি খুন হয়ে যায় পরস্পরের হাতে।
আমাদের ভালবাসাবাসিরা মোহনা খুঁজে পেলে
প্রকৃত জলের ভেতর ঢুকে পড়ে লবন স্বাদ।
আমরা ক্রমশ দূরে চলে যেতে থাকি।
আমাদের কোন অলফাজ থাকে না,কোন নৈশব্দও.
শিরোনামহীন
ভালোবাসা কোন রঙ নয়,
‘দূর’ কোন ছবি এঁকে দেবে কেউ।
ভালোবাসা বন্ধু হোক তোমার
আমি কোন আকাশের তলে ঘুম ছুঁয়ে যাবো।
শিরোনামহীন
সেই রাত আসে নাকো আর।
আসে নাতো ভুল অন্ধকার
বিছানার রঙ লেগে আছে এখনো শরীরে।
জেগে আছে ঘুম আদরে আদরে।
কতদিন হল জমে গেছি পাথরের ঠাণ্ডায় আর তুমি শিশিরের জলে